নাগরিক না হলে রোহিঙ্গারা এমপি হয়েছিল কীভাবে ?

বর্মা সরকার এবং সেদেশের সেনাবাহিনী বর্তমানে বেশ জোরেশোরেই বলে থাকে--আরাকানের রোহিঙ্গারা সেদেশের নাগরিক নয়, বাংলাদেশ থেকে যাওয়া মানুষ।
এই দাবি যে কত স্ববিরোধী তার স্বপক্ষে বহু তথ্য-উপাত্তই দেয়া যায়। এখানে কেবল এটাই উল্লেখ করছি যে, ১৯৪৮ থেকে ১৯৯০ পর্যন্ত সুলতান মাহমুদ, আবুল বাশার, আব্দুল গাফ্ফার, জোহরা বেগম প্রমুখ যে আরাকানের মুসলিম প্রধান এলাকাগুলো থেকে এমপি নির্বাচিত হয়ে দেশটির পার্লামেন্টে প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন বছরের পর বছর (মন্ত্রীও হয়েছিলেন!) সেটা কীভাবে সম্ভব হলো? এই ব্যক্তিরা কীভাবে নির্বাচনে দাঁড়ালেন?
এমনকি ১৯৯০-এ যখন সামরিক বাহিনীর অধীনেই বর্মায় বহু দিন পর প্রথমবারের মতো বহুদলীয় নির্বাচন হলো (যে নির্বাচনে অং সান সুচির দল নির্বাচিত হয়েও সরকার গঠন করতে পারেনি) তখন নীচে উল্লিখিত রোহিংগারা কীভাবে উত্তর আরাকান থেকে পার্লামেন্টে নির্বাচিত হতে পারলেন? কীভাবে তখন রোহিংগারা নিজস্ব রাজনৈতিক দল (ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক এন্ড হিউম্যান রাইটস পার্টি) থেকেই প্রার্থী হতে অনুমতি পেয়েছিল? আইন অনুযায়ী ঐ নির্বাচনে ‘বিদেশী’ ছাড়া সকলকেই ভোট দিতে দেয়া হয়েছিল। তাহলে বুথিডং ও মংডুর এই রোহিংগারা কাদের ভোটের নির্বাচিত হয়েছিলেন?
খ মিং (শামসুল আনোয়ার) (বুথিডং-১)
মো. নুর আহমেদ (বুথিডং-২)
উ চিট লুইঙ (ইব্রাহিম, মংডু-১)
ফজল আহমেদ (মংডু-২)
পুনশ্চ:
উপরের প্রথম চারজন এমপি’র মধ্য থেকে শামসুল আনোয়ারকে (নীচের সারিতে বাম দিক থেকে দ্বিতীয়) অং সান সুচি ১৯৯৮ সালে রোহিংগাদের প্রতিনিধি হিসেবে ‘পিপলস পার্লেমেন্টে’ যোগ দেয়ার আমন্ত্রণ জানান এবং শুধু এই ডাকে সাড়া দেয়ার কারণে তাঁর ৪৭ বছরের জেল হয়েছিল। এমনকি তাঁর পুত্র-কন্যাদেরও ১৭ বছর করে সাজা দেয়া হয়। অথচ এখন সুচিও উত্তর আরাকানে রোহিংগাদের কোনরূপ উপস্থিতির কথা অস্বীকার করে থাকেন!!

No comments

Powered by Blogger.